হামদ ও দুরুদ বাদে-
প্রতিবেশি মানবসমাজের একটি
অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ফলে ইসলামে
প্রতিবেশীর হককে অনেক গুরুত্ব
দেয়া হয়েছে।
রাসুল সাঃ বলেছেন, জিবরীল (আ.) আমাকে প্রতিবেশীর হকের ব্যাপারে এত বেশি তাকিদ
করেছেন যে, আমার কাছে মনে হয়েছে প্রতিবেশীকে মিরাছের অংশিদার বানিয়ে দেয়া হবে। (বুখারী-
মুসলিম)
কিন্তু আজকাল এ বিষয়ে আমাদের মাঝে চরম
অবহেলা পরিলক্ষিত হয়। বিশেষ করে শহরের মানুষের মাঝে। বছরের পর বছর পার হয় পাশের বাড়ির কারো সাথে কোনো কথা হয় না,
খোঁজ খবর নেওয়া হয় না; বরং বিভিন্নভাবে প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া হয়। অথচ প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ ও তাকে কষ্ট না দেওয়াকে
ঈমানের সাথে যুক্ত করা হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যে আল্লাহ
ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে
সে যেন প্রতিবেশীর সাথে
সদাচরণ করে। মুসলিম)
আরেক হাদীসে
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যে আল্লাহ
ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে
সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না
দেয়। মুসলিম।
এখন আমাদের বুজতে হবে প্রতিবেশী কে?
প্রতিবেশী বলতে মুসলিম, কাফের,
নেক বান্দা,ফাসেক, বন্ধু,
শত্রু,পরদেশী, স্বদেশী, উপকারী,
ক্ষতিসাধনকারী, আত্মীয়,
অনাত্মীয়, নিকটতম বা তুলনামূলক
একটু দূরের প্রতিবেশী সবাই
অন্তর্ভুক্ত।
আর প্রতিবেশী সাধারণত তিন
শ্রেণীর হয়ে থাকে এবং তাদের
হকও বিভিন্ন দিকে লক্ষ করে কম
বেশী হয়ে থাকে।
১. যার এক দিক থেকে হক থাকে। সে হল, অনাত্মীয়
বিধর্মী প্রতিবেশী। এ ব্যক্তির হক
শুধু প্রতিবেশী হওয়ার ভিত্তিতে।
২. যার দুই দিক থেকে হক থাকে। সে হল, মুসলিম প্রতিবেশী, যার সাথে আত্মীয়তার কোনো সম্পর্ক নেই। এ ব্যক্তির হক প্রতিবেশী এবং মুসলিম হওয়ার দিক থেকে।
৩. যার তিন দিক থেকে হক থাকে। সে হল,
মুসলিম আত্মীয় প্রতিবেশী। এ
ব্যক্তির হক প্রতিবেশী, মুসলিম ও
আত্মীয় হওয়ার দিক থেকে।
তবে প্রত্যেক শ্রেণীই যেহেতু প্রতিবেশী তাই প্রতিবেশীর সকল হকের ক্ষেত্রে সবাই সমান হকদার।
আর প্রতিবেশীর খোঁজ খবর রাখা,
বিপদে আপদে এগিয়ে যাওয়া, একে
অপরের সুখ-দুঃখের শরিক হওয়া,
হাদিয়া আদান প্রদান করা, সেবা
শুশ্রূষা করা, প্রতিবেশীর কেউ
মারা গেলে সান্ত্বনা দেওয়া,
কাফন দাফনে শরিক হওয়া, একে
অপরের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দেওয়া,
প্রতিবেশীর প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেওয়া, প্রতিবেশীর কষ্টের কারণ হয় এমন সব ধরনের
কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা
ইত্যাদি সবই একজন মুমিনের
স্বভাবজাত বিষয় হওয়া উচিত।
প্রতিবেশীর হক নিয়ে কুরআনে
আল্লাহ বলেন- আল্লাহর ইবাদাত করা ও তার
সাথে কাউকে শরিক না করা-এই
বিধানের সাথে উল্লেখ করেছেন
বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের হক। তার
মধ্যে রয়েছে মাতা পিতার হক,
আত্মীয় স্বজনের হক, এতীমের হক
ইত্যাদি। এসব গুরুত্বপূর্ণ হকের
সাথেই আল্লাহ প্রতিবেশীর হককে
উল্লেখ করেছেন। এ থেকেই বোঝা
যায়, প্রতিবেশীর হককে আল্লাহ কত গুরুত্ব দিয়েছেন এবং তা রক্ষা করা আমাদের জন্য কত জরুরি।
আল্লাহ বলেছেন-তোমরা
আল্লাহর ইবাদাত কর এবং কোনো
কিছুকে তার সাথে শরিক করো না।
এবং পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন,
এতীম, অভাবগ্রস্থ, নিকট-
প্রতিবেশী, দূর-প্রতিবেশী,
সংগী-সাথী, মুসাফির ও
তোমাদের দাস-দাসীদের সাথে
ভালো ব্যবহার কর। নিশ্চয় আল্লাহ
দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন
না।
প্রশ্ন হলো উত্তম প্রতিবেশী কে?
এ প্রশ্নের সহজ উত্তর হল, যে
প্রতিবেশীর সাথে ভালো আচরণ
করে এবং প্রতিবেশীর সকল হক
যথাযথভাবে আদায় করে। ফলে
প্রতিবেশী তার উপর সন্তুষ্ট থাকে
এবং আল্লাহ্ও তার উপর সন্তুষ্ট
থাকেন।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে
আমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ... যে স্বীয়
প্রতিবেশীর দৃষ্টিতে ভালো সেই
সর্বোত্তম প্রতিবেশী। (
ইবনে খুযাইমা, শুআবুল
ঈমান বায়হাকী,
আহমদ)
প্রতিবেশীর খোঁজ খবর রাখা
ঈমানের দাবি
হযরত ইবনে আববাস রা. থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঐ
ব্যক্তি মুমিন নয় যে পেটপুরে খায়
অথচ তার পাশের প্রতিবেশী না
খেয়ে থাকে। (মুসনাদে আবু ইয়ালা,আল আদাবুল মুফরাদ)
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়, অনেক
প্রতিবেশীই এমন আছে, যাদের
দেখে বোঝার উপায় নেই যে, তারা
অভাবে দিন কাটাচ্ছে। আবার
আমার কাছে কখনো চাইবেও না।
কুরআন মাজীদে এদেরকে ‘মাহরূম’
বলা হয়েছে, সূরা যারিয়াতে
আল্লাহ তায়ালা বলেন- তাদের সম্পদে রয়েছে অভাবগ্রস্ত ও
মাহরূমের (বঞ্চিতের) হক। (সূরা
যারিয়াত )
এক্ষেত্রে আমাদের কর্তব্য, নিজে থেকে তাদের খোঁজ
খবর রাখা এবং দেওয়ার ক্ষেত্রে
এমন পন্থা অবলম্বন করা, যাতে সে
লজ্জা না পায়। এজন্যইতো যাকাত
দেওয়ার ক্ষেত্রে এটা বলে দেয়া
জরুরি নয় যে, আমি তোমাকে
যাকাত দিচ্ছি; বরং ব্যক্তি
যাকাতের যোগ্য কি না এটুকু জেনে
নেয়াই যথেষ্ট।
আর আমি প্রতিবেশীর প্রয়োজন
পুরা করব তাহলে আল্লাহ আমার
প্রয়োজন মিটিয়ে দিবেন এবং
আমার সহায় হবেন। হাদীস শরীফে
এসেছে, যে তার ভাইয়ের প্রয়োজন
পুরা করে আল্লাহ তার প্রয়োজন
পুরা করেন। (বুখারী,মুসলিম)
প্রতিবেশী আমার জীবনের
আবশ্যকীয় অনুষঙ্গ। তার সাথে
আমার আচরণ সুন্দর হবে তা কি বলে
বোঝাতে হয়? আর আমি যদি মুমিন
হই তাহলে তো তা আমার ঈমানের
দাবি। হযরত আবু শুরাইহ্ রা. বলেন,
আমার দুই কান শ্রবণ করেছে এবং
আমার দুই চক্ষু প্রত্যক্ষ করেছে যখন
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, যে আল্লাহর
প্রতি ঈমান রাখে এবং আখেরাতে
বিশ্বাস রাখে সে যেন স্বীয় প্রতিবেশীকে সম্মান করে।
মুসলিমের বর্ণনায় আছে ‘সে যেন
স্বীয় প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ
করে।’
(বুখারী-মুসলিম)
প্রতিবেশীদের পরস্পরের সুসম্পর্ক
বৃদ্ধির ক্ষেত্রে হাদিয়ার আদান-
প্রদান খুবই কার্যকর পন্থা। এর
মাধ্যমে হৃদ্যতা সৃষ্টি হয় ও
ভ্রাতৃত্বের বন্ধন মজবুত হয়।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা
হাদিয়া আদান-প্রদান কর। এর
মাধ্যমে তোমাদের মাঝে হৃদ্যতা
সৃষ্টি হবে।’ (দ্র. আল আদাবুল
মুফরাদ,বুখারি )
এক প্রতিবেশী আরেক
প্রতিবেশীকে হাদিয়া দেওয়ার
বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ যে, সামান্য
জিনিস হাদিয়া দিতেও
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্বুদ্ধ
করেছেন। এক হাদীসে আছে,
আল্লাহর রাসূল সাঃ হযরত আবু যর
রা.- কে বলেন, হে আবু যর, তুমি
ঝোল (তরকারি) রান্না করলে তার
ঝোল বাড়িয়ে দিও এবং তোমার
প্রতিবেশীকে তাতে শরিক করো। (মুসলিম)
অন্য হাদীসে রাসুল সাঃ নারীদেরকে এ বিষয়ে
উদ্বুদ্ধ করে বলেছেন, হে মুসলিম
নারীগণ! তোমাদের কেউ যেন
প্রতিবেশীকে হাদিয়া দিতে
সংকোচবোধ না করে। যদিও তা
বকরীর খুরের মত একটি নগন্য বস্ত্তও
হয়। ( বুখারী)
সুতরাং প্রতিবেশী নারীরাও
নিজেদের মাঝে হাদিয়া আদান-
প্রদান করবেন।আমার বাসায় ভালো কিছু রান্না
হলে প্রতিবেশীকে না জানালেও
রান্নার ঘ্রাণ তো তাকে জানিয়ে
দেয়; পাশের বাড়িতে ভালো কিছু
রান্না হচ্ছে। বড়দের কথা বাদ
দিলাম, ঘ্রাণ পেয়ে ছোটদের মনে
তো আগ্রহ জাগবে তা খাওয়ার।
সুতরাং তাদের দিকে লক্ষ্য রেখে
ঝোল বাড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে
হোক বা নিজে একটু কম খাওয়ার
মাধ্যমে হোক সামান্য কিছু যদি
পাঠিয়ে দিই তাহলে ঐ ছোট্ট
শিশুর মনের ইচ্ছা যেমন পুরা করা
হবে তেমনি আল্লাহও খুশি হবেন।
যা আমার রিযিকে বরকতের কারণ
হবে ইনশাআল্লাহ। যে খাদেম
খানা তৈরি করল তাকেও খানায়
শরিক করার কথা হাদীসে এসেছে।
কারণ এ খাবার প্রস্ত্তত করতে
গিয়ে সে এর ধোঁয়া যেমন সহ্য
করেছে তেমনি এর সুঘ্রাণও তার
নাকে ও মনে লেগেছে। সুতরাং...।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের
খাদেম যখন তোমাদের জন্য খানা
প্রস্ত্তত করে নিয়ে আসে তখন
তাকে যদি সাথে বসিয়ে
খাওয়াতে না-ও পার তাকে দু এক
লোকমা হলেও দাও। (সামান্য কিছু
দিয়ে হলেও তাকে এই খানায় শরিক
কর) কারণ, সে-ই তো এই খানা
প্রস্ত্তত করার কষ্ট ও আগুনের তাপ
সহ্য করেছে। (বুখারী)
এখানে আরেকটি বিষয়
লক্ষণীয়,ভালো কিছু রান্না হলে
মাঝে মধ্যে কাজের বুয়ার সন্তানদের জন্য কিছু দেয়া উচিত।অনেক সময় খাবার বেঁচে যায়। হতে
পারে আমার ঘরের এ বেঁচে যাওয়া
খাবারই কাজের বুয়ার সন্তানদের
জন্য হবে ‘ঈদের খাবার’। আর আশা
করা যায় এর বিনিময়ে আল্লাহ
আমার জন্য জান্নাতের
মেহমানদারির ফয়সালা করবেন।
আর প্রতিবেশী যদি দরিদ্র হয়
তাহলে এ বিষয়ে তার হক আরো
বেশি। কারণ দরিদ্রকে খানা
খাওয়ানো যেমন অনেক সওয়াবের
কাজ তেমনি দরিদ্রকে খানা না-
খাওয়ানো জাহান্নামে যাওয়ার
একটি বড় কারণ। কুরআন মজীদে ‘ছাকার’ নামক জাহান্নামে
যাওয়ার কারণ হিসেবে নামায না
পড়ার বিষয়টির সাথে সাথে
দরিদ্রকে খানা না খাওয়ানোও
গুরুত্বসহকারে উল্লেখিত হয়েছে।
কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, (জাহান্নামীকে জিজ্ঞেস করা
হবে) (অর্থ) কোন বিষয়টি
তোমাদেরকে ‘ছাকার’ নামক
জাহান্নামে ঠেলে দিয়েছে? (তারা উত্তরে বলবে) আমরা
নামায পড়তাম না এবং দরিদ্রকে
খানা খাওয়াতাম না। (
মুদ্দাছ্ছির)
প্রতিবেশীর মধ্যে যেমন আছে
নিকট প্রতিবেশী, নিকটতম
প্রতিবেশী ও তুলনামূলক একটু দূরের
প্রতিবেশী তেমনি আছে মুসলিম ও
বিধর্মী। এখন কাকে হাদিয়া দিব
বা কাকে আগে দিব? হযরত আয়েশা
রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম-
আমার দুই প্রতিবেশী। এদের কাকে
হাদিয়া দিব? রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, যে তোমার
বেশি নিকটবর্তী। (বুখারী)
মুজাহিদ রহ. বলেন, একবার আমি
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আম্র রা.-এর
কাছে ছিলাম। তার গোলাম একটি
বকরীর চামড়া ছাড়াচ্ছিল। তখন
তিনি বললেন, তোমার এ কাজ শেষ
হলে সর্বপ্রথম আমাদের ইহুদী
প্রতিবেশীকে দিবে। তখন এক
ব্যক্তি বলল, আল্লাহ আপনার
এসলাহ করুন। আপনি ইহুদীকে আগে
দিতে বলছেন! তখন তিনি বললেন, (হাঁ) আমি রাসূল সসাঃ কে প্রতিবেশীর হকের
বিষয়টি এত বেশি গুরুত্ব দিয়ে
বলতে শুনেছি যে, আমাদের
আশংকা হয়েছে বা মনে হয়েছে,
প্রতিবেশীকে মিরাছের হকদার
বানিয়ে দেয়া হবে। (আল আদাবুল
মুফরাদ, বুখারী,শরহু
মুশকিলিল আছার, তহাবী)
অনেক সময় এমন হয়, প্রতিবেশীর
প্রয়োজনে কিছু ছাড় দিতে হয়।
কিংবা নিজের কিছু ক্ষতি
স্বীকার করলে প্রতিবেশীর অনেক
বড় উপকার হয় বা সে অনেক বড়
সমস্যা থেকে বেঁচে যায়। তেমনি
একটি বিষয় হাদীস শরীফে উদ্ধৃত
হয়েছে, যা মুমিনকে এ বিষয়ে
উদ্বুদ্ধ করে। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো
প্রতিবেশী যেন অপর
প্রতিবেশীকে তার দেয়ালে কাঠ
স্থাপন করতে বাধা না দেয়। (বুখারী
মুসলিম)
আরেক হাদীসে এসেছে, যে তার (মুসলিম) ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ
করে স্বয়ং আল্লাহ তার প্রয়োজন
পুরা করেন। ( মুসলিম)
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আদান
প্রদান আমাদের প্রায় সকলেরই সূরা মাউন
মুখস্থ আছে। ‘মাউন’ অর্থ
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস।
দৈনন্দিন জীবনে আমাদের ছোট
খাট অনেক জিনিসেরই প্রয়োজন
হয়। কোনো বস্ত্ত হয়তো সামান্য,
কিন্তু তার প্রয়োজন নিত্য। যেমন
লবন। খুবই সামান্য জিনিস, কিন্তু
তা ছাড়া আমাদের চলে না। কখনও
এমনও হয় দশ টাকার লবন কেনার জন্য
বিশ টাকা রিক্সা ভাড়া খরচ
করতে হবে বা এখন এমন সময় যে তা
পাওয়া যাবে না। অথচ লবন না হলে
চলবেই না। তখন আমরা পাশের
বাড়ি বা প্রতিবেশীর দ্বারস্থ হই।
এমন সময় এ সাধারণ বস্ত্তটি যদি
কেউ না দেয় তাহলে নিশ্চয়ই অনেক
কষ্ট হয়ে যাবে। কোনো প্রতিবেশী
যদি এমন হয় তাহলে আল্লাহও তাকে ভৎর্সনা
দিয়েছেন। সূরা মাউনে আল্লাহ
বলেছেন, সুতরাং দুর্ভোগ
সেই সালাত আদায়কারীদের,
যারা তাদের সালাত সম্বন্ধে
উদাসীন, যারা লোক দেখানোর
জন্য তা করে, এবং গৃহস্থালীর
প্রয়োজনীয় ছোট-খাট
সাহায্যদানে বিরত থাকে। (সূরা
মাউন)
আরেকটি বিষয় হক্কে শুফ্আ, এটি প্রতিবেশীর গুরুত্বপূর্ণ একটি
হক। নিজের জমি বা বাড়ি যদি
কেউ বিক্রি করতে চায় তাহলে সে
ব্যাপারে পার্শ্ববর্তী
প্রতিবেশীর হক সবচেয়ে বেশি।
অর্থাৎ তাকে আগে জানাতে হবে
যে, আমি আমার বাড়ি বা জমি
বিক্রি করতে চাই তুমি তা কিনবে
কি না। যদি সে কিনতে না চায়
তাহলে অন্যের কাছে বিক্রি করা
যাবে। তাকে না জানিয়ে কারো
কাছে বিক্রি করা যাবে না। করলে
সে দাবি করতে পারবে যে, আমি
এই জমি ক্রয় করব। এটা তার হক।
কারণ, হতে পারে এ জমিটি তার
প্রয়োজন বা এমন ব্যক্তি তা ক্রয়
করল যার কারণে সে অনেক ক্ষতির
সম্মুখীন হতে পারে ইত্যাদি। আর
একেই শরীয়তের পরিভাষায় ‘হক্কে
শুফ্আ’ বলে।
হাদীস শরীফে প্রতিবেশীর এ
হকটিকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া
হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
যদি কেউ তার জমি বিক্রি করতে
চায় তাহলে সে যেন তার
প্রতিবেশীকে জানায়। (সুনানে
ইবনে মাজাহ)
আরেক হাদীসে হযরত ইবনে আববাস
রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘শুফ্আ’-র
বিষয়ে প্রতিবেশীর হক সবচেয়ে
বেশি। প্রতিবেশি উপস্থিত না
থাকলেও তার অপেক্ষা করতে হবে।
এটা তখন যখন তাদের উভয়ের
চলাচলের পথ এক হয়। (সুনানে ইবনে
মাজাহ,তিরমিযী)
এ ধরনের আরো অনেক হাদীসে হক্কে শুফ্আর
বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে।
মন্দ প্রতিবেশী থেকে আমরা
আল্লাহর কাছে পানাহ চাই। কারণ
একজন মন্দ প্রতিবেশী সাধারণ
জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করবে বা
আমাকেও মন্দের দিকে নিয়ে
যাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা মন্দ প্রতিবেশী থেকে
আল্লাহর কাছে পানাহ চাও।(নাসায়ী
শুআবুল ঈমান, বায়হাকী)
আমি কারো জন্য মন্দ প্রতিবেশী
হব না। যেমনিভাবে আমি চাই না
যে, আমার প্রতিবেশীটি মন্দ হোক
তেমনিভাবে আমাকেও ভাবতে
হবে, আমিও যেন আমার
প্রতিবেশীর কষ্টের কারণ না হই।
হযরত নাফে ইবনে আব্দুল হারিস
রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, উত্তম
প্রতিবেশী ব্যক্তির সৌভাগ্যের
কারণ। (মুসনাদে আহমাদ-আল আদাবুল মুফরাদ,
বুখারী)
আখেরাতের প্রথম বাদী-বিবাদী
প্রতিবেশীর হক নষ্ট করা বা তাকে
কষ্ট দেওয়া অনেক বড় অন্যায়।
কখনো দুনিয়াতেই এর সাজা পেতে
হয় আর আখেরাতের পাকড়াও তো
আছেই। আমার অর্থবল বা জনবল
আছে বলে আমি প্রতিবেশীর হক
নষ্ট করে পার পেয়ে যাব এমনটি নয়।
হাঁ, দুনিয়ার আদালত থেকে হয়ত
পার পেয়ে যাব, কিন্তু আখেরাতের
আদালত থেকে আমাকে কে
বাঁচাবে?
হযরত উকবা ইবনে আমের
রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের
দিন প্রথম বাদী-বিবাদী হবে দুই
প্রতিবেশী। (মুসনাদে আহমাদ,আল মুজামুল কাবীর,তবারানী)
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়ার
বিষয়টিকে নবী সাঃ ঈমানের
দুর্বলতা বলে চিহ্নিত করেছেন।
কোনো ব্যক্তি মুমিন আবার প্রতিবেশীকে কষ্টও দেয় তা ভাবা
যায় না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়!
আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়!!
আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়!!!
সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন, সে
কে হে আল্লাহর রাসূল? রাসূ্লুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তির
অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী
নিরাপদ নয়। ( বুখারী)
আরেক হাদীসে এসেছে, যে
আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে ও
আখেরাতে বিশ্বাস করে সে যেন
স্বীয় প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। (বুখারী)
কষ্ট দেওয়ার বিভিন্ন রূপ হতে
পারে। যেমন, জানালা দিয়ে উঁকি
দেয়া, চলা ফেরার ক্ষেত্রে দৃষ্টি
অবনত না রাখা, প্রতিবেশীর
বাসার সামনে ময়লা ফেলা,
জোরে ক্যাসেট বাজানো, বিভিন্ন
অনুষ্ঠানের সময় প্রতিবেশীর ঘুম বা
বিশ্রামের ক্ষতি করা,
প্রতিবেশীর চলাচলের রাস্তা বন্ধ
করে দেওয়া, গৃহপালিত পশুর
মাধ্যমে কষ্ট দেওয়া ইত্যাদি।
নিজের গৃহপালিত পশু ছেড়ে
দিলাম আর তা প্রতিবেশীর
ফসলের ক্ষতি করল কিংবা
প্রতিবেশীর অবলা পশু এসে কিছু
নষ্ট করেছে বলে আমি পশুটির
কোনো ক্ষতি করলাম বা পশুর
মালিককে গালি দিলাম। এসকল
ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া ও ধৈর্য্য
ধারণ করা উচিত। আল্লাহ এর
প্রতিদান দিবেন।
আরেকটি বিষয় দেখেন-অনেকে গাণ বাজান উচ্ছ আওয়াজে।প্রতিবেশীর খারাফ লাগতে পারে,আপনাকে নাও বলতে পারে,খেয়াল রাখতে হবে।আপনার শুনার ইচ্ছা হলে কম বলিউমে শুনবেন,কারন শখটা আপনার অন্যের নয় এটা মাথায় রাখবেন।তদ্রুপ ওয়াজ,গজল,তেলাওয়াত শুনার ক্ষেত্রেও সীমা ঠিক রাখবেন।আপনার পছন্দ হলে অন্যেরও হবেবে তা নয়।বরং খারাফও লাগতে পারে।
এখন প্রশ্ন হলো প্রতিবেশী কষ্ট দিলে কী করব?
হতে পারে আমার প্রতিবেশী
আমাকে কষ্ট দেয় তাই বলে কি
আমিও প্রতিবেশীকে কষ্ট দিব? তা
হতে পারে না। মুমিন তো সর্বদা
ভালো আচরণ করে। মুমিনের গুণ তো
ﺃﺣﺴﻦ ﺇﻟﻰ ﻣﻦ ﺃﺳﺎﺀ ﺇﻟﻴﻚ
তোমার সাথে যে মন্দ আচরণ করে
তুমি তার সাথে ভালো আচরণ কর।’
সে তো কুরআনের ঐ আয়াত শুনেছে
ﻭﻟﻤﻦ ﺻﺒﺮ ﻭﻏﻔﺮ ﺇﻥ ﺫﻟﻚ ﻟﻤﻦ ﻋﺰﻡ ﺍﻷﻣﻮﺭ .
প্রকৃতপক্ষে যে সবর অবলম্বন করে ও
ক্ষমা প্রদর্শন করে, তো এটা বড়
হিম্মতের কাজ। (সূরা শূরা)
হাদীস শরীফে এসেছে, আল্লাহ
তিন ব্যক্তিকে পছন্দ করেন, তাদের
একজন ঐ ব্যক্তি, যার একজন মন্দ
প্রতিবেশী রয়েছে, সে তাকে কষ্ট
দেয়। তখন ঐ ব্যক্তি ছবর করে এবং
আল্লাহর ছাওয়াবের আশা রাখে।
একপর্যায়ে ঐ প্রতিবেশীর
ইন্তেকাল বা চলে যাওয়ার মাধ্যমে
আল্লাহ তাকে মুক্তি দেন। (মুসনাদে আহমাদ,
আলমুসতাদরাক,
শুআবুল ঈমান, বায়হাকী)
প্রতিবেশীর হক আদায় করা যেমন
জরুরি প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া
বা তার হক নষ্ট করা তেমনি মস্ত
বড় গুনাহ। একই অন্যায় প্রতিবেশীর
ক্ষেত্রে করলে অন্যের তুলনায় দশ
গুণ বেশি বা বড় বলে গণ্য হয়।
হযরত মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ রা.
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার
সাহাবীগণকে যিনা সম্পর্কে
জিজ্ঞেস করলেন। তারা বললো,
তাতো হারাম। আল্লাহ ও তাঁর
রাসূল তা হারাম ঘোষণা করেছেন।
তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,
কোনো ব্যক্তি দশজন নারীর সাথে
যিনা করলে যে গুনাহ, প্রতিবেশীর
স্ত্রীর সাথে যিনা করা তার
চেয়েও বেশি ও মারাত্মক গুনাহ।
তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে
চুরি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন।
তারা বললো, তাতো হারাম।
আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তা হারাম
ঘোষণা করেছেন। তখন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বললেন, দশ বাড়িতে চুরি
করা যত বড় অন্যায় প্রতিবেশীর
বাড়িতে চুরি করা এর চেয়েও বড়
অন্যায়। (মুসনাদে আহমাদ, আলআদাবুল মুফরাদ, শুআবুল ঈমান বায়হাকী)
অনেক সময় এমন হয় যে দুই
প্রতিবেশী তাদের বাড়ির
সীমানা নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে
পড়ে। যে প্রতিবেশীর শক্তি বেশি
সে জোরপূর্বক নিজের সীমানা
বাড়িয়ে নেয়। এটা বসতবাড়ির
ক্ষেত্রে যেমন হয় ফসলের জমির
প্রতিবেশীর সাথে আরো বেশি
হয়। যাকে বলে ‘আইল ঠেলা’।
সামান্য যমিন ঠেলে সে নিজের
ঘাড়ে জাহান্নাম টেনে আনল।
যতটুকু যমিন সে জবরদস্তি বাড়িয়ে
নিল সে নিজেকে তার চেয়ে
সাতগুণ বেশি জাহান্নামের দিকে
ঠেলে নিল। হাদীস শরীফে
এসেছে, যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে এক
বিঘত জমি দখল করল, কিয়ামতের
দিন ঐ জমির সাত তবক পরিমাণ
তার গলায় বেড়ি আকারে পরিয়ে
দেয়া হবে। ( মুসলিম)
এক মন্দ প্রতিবেশীর ঘটনা
প্রতিবেশীর সাথে মানুষের সম্পর্ক
সামান্য সময়ের নয়; বরং সকাল-
সন্ধ্যা, রাত-দিন, মাস ও বছরের বা
সারা জীবনের। এ প্রতিবেশী যদি
মন্দ হয় তাহলে ভোগান্তির আর
শেষ থাকে না। তেমনি এক মন্দ
প্রতিবেশীর ঘটনা হাদীস শরীফে
বর্ণিত হয়েছে।
হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে
বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামের কাছে এসে তার
প্রতিবেশীর ব্যাপারে অভিযোগ
করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে
বললেন, তুমি ছবর কর। এভাবে সে
তিনবার আসার পর তৃতীয় বা চতুর্থ
বারে নবীজী তাকে বললেন,
তোমার বাড়ির আসবাবপত্র
রাস্তায় নিয়ে রাখ। সাহাবী তাই
করলেন। মানুষ সেখান দিয়ে যচ্ছিল
এবং ঐ প্রতিবেশীকে অভিশাপ
দিচ্ছিল। তখন ঐ প্রতিবেশী
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লামের কাছে গিয়ে বলল,
আল্লাহর রাসূল! মানুষ আমাকে যা
তা বলছে। নবীজী বললেন, মানুষ
তোমাকে কী বলছে? সে বলল, মানুষ
আমাকে লানত করছে। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বললেন, তার আগেই
আল্লাহ তোমাকে লানত করেছেন।
সে বলল, আল্লাহর রাসূল! আমি আর
এমনটি করব না (প্রতিবেশীকে কষ্ট
দিব না।)। তারপর অভিযোগকারী
নবীজীর দরবারে এলে নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তাকে বললেন, তুমি (প্রতিবেশীর অনিষ্ট থেকে)
নিরাপদ হয়েছ। (আলমুসতাদরাক,হাকেম, আলমুজামুল
কাবীর,তবারানী,
সহীহ ইবনে হিববান)
প্রতিবেশীর সাথে মন্দ আচরণ
ব্যক্তির সব আমল বরবাদ করে দেয়।
তাকে নিয়ে ফেলে জাহান্নামে।
হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে
বর্ণিত, এক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামকে বলল, এক নারীর
ব্যাপারে প্রসিদ্ধ, সে বেশি
বেশি (নফল) নামায পড়ে, রোযা
রাখে, দুই হাতে দান করে। কিন্তু
যবানের দ্বারা স্বীয়
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় (তার
অবস্থা কী হবে?)। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বললেন, সে জাহান্নামে
যাবে। আরেক নারী বেশি (নফল)
নামাযও পড়ে না, খুব বেশি রোযাও
রাখে না আবার তেমন দান সদকাও
করে না; সামান্য দু-এক টুকরা পনির
দান করে। তবে সে যবানের দ্বারা
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় না (এই
নারীর ব্যাপারে কী বলেন?)। নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বললেন, সে জান্নাতী। (মুসনাদে আহমাদ,
আলআদাবুল মুফরাদ, বুখারী)
পাশাপাশি থাকার কারণে একে
আপরের ভালো মন্দ কিছু
জানাজানি হয়ই। গোপন করতে
চাইলেও অনেক কিছু গোপন করা যায়
না। প্রতিবেশীর এসকল বিষয়
পরস্পরের জন্য আমানত। নিজের
দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণেই
একে অপরের দোষ ঢেকে রাখা
জরুরি। আমি যদি তার দোষ প্রকাশ
করে দিই তাহলে সেও আমার দোষ
প্রকাশ করে দিবে। আর আমি যদি
তার দোষ ঢেকে রাখি তাহলে সেও
আমার দোষ গোপন রাখবে। এমনকি
এর বদৌলতে আল্লাহও আমার এমন
দোষ গোপন রাখবেন, যা
প্রতিবেশীও জানে না। হাদীস
শরীফে এসেছে, যে তার মুসলিম
ভাইয়ের দোষ ঢেকে রাখে
আল্লাহও কিয়ামতের দিন তার
দোষ ঢেকে রাখবেন। (সহীহ
মুসলিম)
আল্লাহ আমাদের প্রতিবেশীর
হকের ব্যাপারে সচেতন হওয়ার
তাওফিক দান করুন। আমীন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন