নামাজে সুরা পড়া প্রসঙ্গে

১। কেউ কেউ বলে নামাজে ছোট ছোট সুরাগুলো পড়ার বেলায় একটা মাঝখানে রেখে
আরেকটা পড়া মাকরুহ।যেমনঃ প্রথম রাকাতে সুরা ইখলাস পড়লে দ্বিতীয় রাকাতে
সুরা নাস পড়া মাকরুহ।ফালাক পড়তে হবে।আদৌ কথাটি সঠিক কিনা? দলিলসহ জানাবেন প্লিজ।

উত্তরঃ-
ﺣﺎﻣﺪﺍ ﻭﻣﺼﻠﻴﺎ ﻭﻣﺴﻠﻤﺎ، ﺍﻣﺎﺑﻌﺪ
সমাধানঃ-
নামাজে সুরা মিলানো সম্পর্কিত মাসয়ালাঃ-
প্রথমেই জেনে রাখা প্রয়োজন যে, ফরজ নামাজে ইচ্ছাকৃতভাবে কুরআনের ক্রমধারা ঠিক না রাখা মাকরুহ। ভুলে পড়লে মাকরুহ হবে না। ক্রমধারা অর্থ হচ্ছে- প্রথম রাকাআতে কুল হুয়াল্লাহু আহাদ পড়ে দ্বিতীয় রাকাআতে ইন্না আ’ত্বাইনা পড়া।
ফরজ নামাজে একই সুরার অনেক আয়াত একত্রে পড়া এবং দু’আয়াতের কম ছেড়ে দ্বিতীয় রাকআতে সামনে থেকে পড়া মাকরুহ। আবার কেউ যদি দুই সুরা এভাবে পড়ে যে, মাঝখানে একটি সুরা চেড়ে দিয়ে পরবর্তী সুরা পড়ে তবে তা মাকরুহ। যেমন- প্রথম রাকাআতে সুরা মাউন এবং দ্বিতীয় রাকাআতে সুরা কাফিরুন পড়ে মাঝে সুরা কাউছার ছেড়ে দেয় তাহলে মাকরুহ হবে। এ হুকুম ফরজ নামাজের জন্য নফলের জন্য নয়।
ফরজ নামাজে একই রাকাআতে সুরা মিলানোর মধ্যে এক বা একাধিক আয়াত ছেড়ে দুই সুরা পড়া মাকরুহ। নফলের ক্ষেত্রে এ হুকুম প্রযোজ্য নয়।
(ফতওয়ায়ে শামী ১/৫৪৭ ও ফতওয়ায়ে আলমগীরি ১/৭৮-৭৯)
ﻭَﻳُﻜْﺮَﻩُ ﺍﻟْﻔَﺼْﻞُ ﺑِﺴُﻮﺭَﺓٍ ﻗَﺼِﻴﺮَﺓٍ ﻭَﺃَﻥْ ﻳَﻘْﺮَﺃَ ﻣَﻨْﻜُﻮﺳًﺎ
ﺇﻟَّﺎ ﺇﺫَﺍ ﺧَﺘَﻢَ ﻓَﻴَﻘْﺮَﺃُ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﺒَﻘَﺮَﺓِ . ﻭَﻓِﻲ ﺍﻟْﻘُﻨْﻴَﺔِ ﻗَﺮَﺃَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺄُﻭﻟَﻰ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮُﻭﻥَ ﻭَﻓِﻲ ﺍﻟﺜَّﺎﻧِﻴَﺔِ – ﺃَﻟَﻢْ ﺗَﺮَ – ﺃَﻭْ – ﺗَﺒَّﺖْ – ﺛُﻢَّ ﺫَﻛَﺮَ ﻳُﺘِﻢُّ ﻭَﻗِﻴﻞَ ﻳَﻘْﻄَﻊُ ﻭَﻳَﺒْﺪَﺃُ، ﻭَﻟَﺎ ﻳُﻜْﺮَﻩُ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﻞِ ﺷَﻲْﺀٌ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ، ﻭَﺛَﻠَﺎﺙٌ ﺗَﺒْﻠُﻎُ ﻗَﺪْﺭَ ﺃَﻗْﺼَﺮِ ﺳُﻮﺭَﺓٍ ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﻣِﻦْ ﺁﻳَﺔٍ ﻃَﻮِﻳﻠَﺔٍ، ﻭَﻓِﻲ ﺳُﻮﺭَﺓٍ ﻭَﺑَﻌْﺾِ ﺳُﻮﺭَﺓٍ ﺍﻟْﻌِﺒْﺮَﺓُ ﻟِﻠْﺄَﻛْﺜَﺮِ، ﻭَﺑَﺴَﻄْﻨَﺎﻩُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺨَﺰَﺍﺋِﻦِ :
‏( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ ﺝ١ ﺹ٥٤٧ )
ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺟَﻤَﻊَ ﺑَﻴْﻦَ ﺳُﻮﺭَﺗَﻴْﻦِ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻤَﺎ ﺳُﻮَﺭٌ ﺃَﻭْ ﺳُﻮﺭَﺓً ﻭَﺍﺣِﺪَﺓً ﻓِﻲ ﺭَﻛْﻌَﺔٍ ﻭَﺍﺣِﺪَﺓٍ ﻳُﻜْﺮَﻩُ ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﻓِﻲ ﺭَﻛْﻌَﺘَﻴْﻦِ ﺇﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻤَﺎ ﺳُﻮَﺭٌ ﻟَﺎ ﻳُﻜْﺮَﻩُ ﻭَﺇِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻤَﺎ ﺳُﻮﺭَﺓٌ ﻭَﺍﺣِﺪَﺓٌ ﻗَﺎﻝَ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ : ﻳُﻜْﺮَﻩُ، ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ : ﺇﻥْ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﺍﻟﺴُّﻮﺭَﺓُ ﻃَﻮِﻳﻠَﺔً ﻟَﺎ ﻳُﻜْﺮَﻩُ . ﻫَﻜَﺬَﺍ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤُﺤِﻴﻂِ ﻛَﻤَﺎ ﺇﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻤَﺎ ﺳُﻮﺭَﺗَﺎﻥِ ﻗَﺼِﻴﺮَﺗَﺎﻥِ . ﻛَﺬَﺍ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺨُﻠَﺎﺻَﺔِ .
ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ : ﻟَﺎ ﻳُﻜْﺮَﻩُ ﺃَﺻْﻠًﺎ ﻭَﺇِﺫَﺍ ﻗَﺮَﺃَ ﻓِﻲ ﺭَﻛْﻌَﺔٍ ﺳُﻮﺭَﺓً ﻭَﻓِﻲ ﺍﻟﺮَّﻛْﻌَﺔِ ﺍﻟْﺄُﺧْﺮَﻯ ﺃَﻭْ ﻓِﻲ ﺗِﻠْﻚَ ﺍﻟﺮَّﻛْﻌَﺔِ ﺳُﻮﺭَﺓً ﻓَﻮْﻕَ ﺗِﻠْﻚَ ﺍﻟﺴُّﻮﺭَﺓِ ﻳُﻜْﺮَﻩُ ﻭَﻛَﺬَﺍ ﺇﺫَﺍ ﻗَﺮَﺃَ ﻓِﻲ ﺭَﻛْﻌَﺔٍ ﺁﻳَﺔً ﺛُﻢَّ ﻗَﺮَﺃَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺮَّﻛْﻌَﺔِ ﺍﻟْﺄُﺧْﺮَﻯ ﺃَﻭْ ﻓِﻲ ﺗِﻠْﻚَ ﺍﻟﺮَّﻛْﻌَﺔِ ﺁﻳَﺔً ﺃُﺧْﺮَﻯ ﻓَﻮْﻕَ ﺗِﻠْﻚَ ﺍﻟْﺂﻳَﺔِ ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺟَﻤَﻊَ ﺑَﻴْﻦَ ﺁﻳَﺘَﻴْﻦِ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻤَﺎ ﺁﻳَﺎﺕٌ ﺃَﻭْ ﺁﻳَﺔٌ ﻭَﺍﺣِﺪَﺓٌ ﻓِﻲ ﺭَﻛْﻌَﺔٍ ﻭَﺍﺣِﺪَﺓٍ ﺃَﻭْ ﻓِﻲ ﺭَﻛْﻌَﺘَﻴْﻦِ ﻓَﻬُﻮَ ﻋَﻠَﻰ ﻣَﺎ ﺫَﻛَﺮْﻧَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴُّﻮَﺭِ
ﻫَﺬَﺍ ﻛُﻠُّﻪُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻔَﺮَﺍﺋِﺾِ ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴُّﻨَﻦِ ﻓَﻠَﺎ ﻳُﻜْﺮَﻩُ . ﻫَﻜَﺬَﺍ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤُﺤِﻴﻂِ
‏( ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻱ ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ ﺝ١ ﺹ٧٨ - ٧٩ )

ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

জবাব প্রদানেঃ হাফিজ মাওলানা মাহমুদুর রহমান